দেশে উট পাখির চাষ ও মাংস উৎপাদন বৃদ্ধিতে কাজ করছে বিএলআরআই

উট পাখি

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উট পাখির চাষ ও খামার অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। উট পাখি পালন একটি লাভজনক ও সম্ভাবনাময় কৃষি হতে যাচ্ছে। এই পাখি ঘাস ও লতা-পাতা খেয়ে থাকে। পাশাপাশি সামান্য পরিমান দানাদার খাদ্য খায়। খাদ্য ও প্রতিপালন খরচ তুলনামুলক কম হবে আশা করা যায়। উট পাখি ২ বছরে ১০০ কেজি পর্যন্ত ওজন হতে পারে। বাংরাদেশের আবহাওয়া উট পাখি পালনের অনুকুল।

ইন্টারনেটের তথ্য মতে বাংলাদেশে উট পাখির আমদানি ও খামার স্থাপনের ইতিহাস বেশ পুরনো। ২০১৬ সালে SEENAN BIRDS BREEDINGS FARM, মিরপুর, ঢাকা এই পাখির খামারর স্থাপনের সরকারি অনুমতি পান। SEENAN BIRDS BREEDINGS FARM বিভিন্ন দেশ থেকে পোষা প্রাণি আমদানি, প্রতিপালন ও বাজারজাতকরণ করে থাকে।

পরবর্তিতে ২০১৭ সালে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে ইকো এগ্রো ফার্ম এর মালিক আরজুমান আরা ২৫ সেপ্টেম্বর তারিখে দক্ষিণ আফ্রিকার (মাদার ব্রিডার ফামর্) থেকে বাচ্চার মুল্য ১৫ হাজার টাকা করে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকায় ২৪টি উট পাখির বাচ্চা আমদানি করেন। এর পর উট পাখি গুলিকে তিনি ইকো এগ্রো ফার্মে লালন পালন শুরু করেন। দেশের প্রথম বাণিজ্যিক উট পাখির খামার শিরনামে পূবপশ্চিম প্রত্রিকায খবর প্রকাশ হয়।

তবে এসকল উদ্যোগ মোটামুটি সফল হয়েছে এবং বাংলাদেশে এর সম্ভাবনার দ্বার উম্মোচন করেছে। বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিএলআরআই) এর কর্মকর্তাগন এই পাখির পালনে বাংলাদেশের সম্ভাবনা উপলব্ধি করেছে এবং এর বিস্তার ও সুফল প্রান্তিক পর্যায়ে ছরিয়ে দিতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। তারা উটপাখির জাত উন্নয়ন ও প্রতিপালন নিয়ে গবেষনা করেছে গবেষণা।

২০১৯ সালের ১৮ জুন প্রধানমন্ত্রী অনুমোদিত একটি প্রকল্পে ২২টি উট পাখি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন বিএলআরআই। এটিই বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো উন্নত জাতের উট পাখি নিয়ে গবেষণা। ২২ টির মধ্যে ২ টি পুরুষ ৫ টি প্রাপ্ত বয়স্ক স্ত্রী এবং ১৫টি বাচ্চা রয়েছে।

সাভারের বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিএলআরআই) এদের প্রতিপালন করা হচ্ছে। সম্প্রতি তারা গনমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ৩৩০ টাকা প্রতি কেজিতে উট পাখির মাংস বিক্রি করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।

প্রকল্প পরিচালক ড. মোহাম্মদ সাজেদুল করিম গনমাধ্যম কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “এই বার্ডটি আনার মুল কারটি হচ্ছে যে আমরা বাংলাদেশের মানুষ এখন বর্তমানে ১২৬ গ্রাম প্রত্যেক দিন আমিষ পাচ্ছি। এই আমিষের ক্ষেত্রে আমরা যেহেতু এগিয়ে যাচ্ছি আমরা ঠিক আর ২০ বছর পরে আমরা উন্নত দেশের মানুষে পরিনত হব। কাজেই উন্নত দেশের মানুষের মেধার যে বিকাশ প্রয়োজন তার জন্য কিন্তু এখন থেকেই সেই বিষগুলো বিবেচনায় নিয়ে আশতে হবে।”

এই পখি তার চাহিদা ৬০% খাবার খায় ঘাষ জাতীয় লতা-পাতা থেকে। এর ওজন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন। একটি মা পাখি বছরে ২০ থেকে ২৫ টি বাচ্চা দিতে সক্ষম। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে প্রান্তি পর্যায়ে এই পাখি নিয়ে কাজ শুরু করতে পারবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেছেন।

বিএলআরআই এর মহাপরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল জলিল গণমাধ্যম কে বলেন, ”যেহেতু ঘাস জাতীয় খাবার খেয়ে মাংস উৎপাদন করে ৩০০ টাকা গড়ে প্রতিকেজি মাংস উৎপাদন করা যাবে বলে আমরা আশাকরছি।

এর মাংস ক্ষেতে সুস্বাদু, প্রোটিন ও আয়রণের চাহিদা মেটাতে সক্ষম।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *